শোয়েব আখতার বোলার হিসেবে গতিই ছিলো যার মূল শক্তি


শোয়েব আখতার ছবি-সংগৃহিত


শোয়েব আখতার একজন পাকিস্থানী ক্রিকেটার যিনি পেস বোলার হিসেবে বিশ্বখ্যাত। তাকে ক্রিকেট ভক্তরা বেশি চিনে আগুন ঝরানো পেস বোলার হিসেবে গতির ঝড় তোলার জন্য। তিনি বল করার জন্য দৌড় শুরু করতেন বাউন্ডারি সীমানার কাছ থেকে। তার দৌড় আর গতি অনেক ব্যাটসম্যানের মেরুদন্ড দিয়ে শিহরন বয়ে এনেছিলো। শোয়েব আখতার তার সেরা ফর্মের সময় বিশ্বের সকল ব্যাটারকে কাবু করতে সক্ষম হয়েছিলেন তার গতি দিয়ে। এজন্যই তিনি স্পিড স্টার হিসেবে পরিচিত। তার ডাকনাম ছিলো “ রাওয়াল্পপিন্ডি এক্সপ্রেস”। তিনি ব্যাটসম্যানদের মানসিকতায় প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছিলন।যার কারনে প্রতিপক্ষ তাকে নিয়ে আলাদা পরিকল্পনা করতে বাধ্য হত। তার সময়ের সেরা ব্যাটার ব্রায়ান লারা, শচিন টেন্ডুল্কার, রিকি পন্টিং, সৌরভ গাঙ্গুলি বা অন্যান্যরা সবাই শোয়েবের মুখোমুখি হতেন বাড়তি সতর্কতা নিয়ে। শোয়েব আখতারের বলে ছিলো কাঁচা গতি, মারাত্মক বাউন্সার আর দুঃস্বপ্নের সংমিশ্রন।

 

শোয়েব আখতারের ক্রিকেট ক্যারিয়ার মসৃন ছিলো না । তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরুর সময় পাকিস্থান দলে ছিলেন দুই কিংব্দন্তী ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুসের মত তারকা তাই তাকে পরিশ্রম করেই দলে জায়গা করে নিতে হয়েছিলো।

 শোয়েব আখতার গতির জন্যই বেশি পরিচিত হলেও উইকেট নেওয়ার ক্ষেত্রেও পিছিয়ে ছিলেন না । আখতার টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন ৪৬ টি উইকেট নিয়েছেন ১৭৮ টি । তিনি টেস্ট ম্যাচে ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন ১২ বার ।ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়েছেন ২ বার । তার সেরা ফিগার ১১ রানের বিনিময়ে ৬ উইকেট।

শোয়েব ওয়ান্ডে ম্যাচ খেলেছেন ১৬৩ টি উইকেট পেয়েছেন ২৪৭ টি। সেরা পারফরমেন্স ১৬ রানে ৬ উইকেট।

 

শোয়েব আখতার বিশ্ব রেকর্ড গড়া সবচেয়ে গতি সম্পন্ন বলটি করেছিলেন ২০০৩ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ঐ বলটির গতি ছিলো ১৬১.৩ কিঃমিঃ প্রতি ঘন্টায়।

উইকেট পাওয়ার পর দু-হাত প্রসারিত করে বাজ পাখির মত উড়ে চলা শোয়েব আখতারের টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে ১৯৯৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ওডিআই ম্যাচে অভিষেক হয় তার পরের বছর ১৯৯৮ সালে।

শোয়েব আখতারের ক্যারিয়ারে বিতর্ক, সমালোচনাও ছিলো। ২০০৬ সালে নিষিদ্দ ড্রাগ নেওয়ার অভিযোগে তাকে ঐ সালেই অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশ গ্রহন করতে দেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড আখতারকে ২ বছরের জন্য নিষিদ্দ করে। এছাড়া দলীয় শৃংখলা ভংগ, সতীর্থদের সাথে বাজে ব্যবহারের অভিযোগও করা হয়েছিলো। যদিও শোয়েব আখতার সকল অভিযোগ অস্বীকার করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।

নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে শোয়েব ক্রিকেটে ফিরে ইঞ্জুরির সাথে সংগ্রাম করে পাকিস্থান দলে অন্তর্ভুক্ত হন। শোয়েব তার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলেন ২০১১ সালের মার্চ মাসে। ২০১১ সালের ওয়ান্ডে ওয়ার্ল্ড কাপের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেন এই গতি তারকা।

 

 

 

 

 

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ