হার্ড হিটিং ব্যাটার, বিদ্যুৎ গতির ফিল্ডার হার্শেল গিবস

 

হার্শেল গিবস ছবি-সংগৃহিত

হার্শেল গিবস দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের একজন সাবেক নামকরা তারকা। যার নাম শুনলেই চোখে ভেসে ওঠে মাঠের ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টের বিদ্যুৎ গতির একজন ফিল্ডার এবং হার্ড হিটিং ওপেনিওং ব্যাটার। তার ক্যারিয়ার জুড়ে সফলতা, ব্যর্থতা, বিতর্ক সবমিলিয়ে তাকে হলিউডের ব্লকবাস্টারে পরিনত করেছিলো। তার অভিষেক হয়েছিলো ১৯৯৬ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে। তার ক্যারিয়ার শুর হয়েছিলো মিডল অর্ডার ব্যাটার হিসেবে। পরবর্তীতে তার খেলার ধরণ এবং পারফরম্যান্স দেখে তাকে ওপেনিং ব্যাটার হিসেবে খেলার সুযোগ করে দেওয়া হয়।

গিবস প্রথম ১৯ টি ওয়ান্ডে ম্যাচে ৫০ বা অর্ধশত রানও করতে পারেননি। তারপরে তিনি তার জাত চিনিয়েছেন সমগ্র ক্রিকেট বিশ্বকে। তিনি মোট ২৪৮ টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলাছেন মোট রান করেছেন ৮০৯৪। যার মধ্যে  ২১ টি শতক এবং ৩৭ টি অর্ধশতক রানের ইনিংস খেলেছেন।

 ওয়ানডে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে গিবসের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ১৭৫। যেটি তিনি করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেই ঐতিহাসিক ম্যাচে। যেখানে অস্ট্রেলিয়ার করা ৪৩৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে জোহানিসবার্গে ব্যাটিং তান্ডব চালিয়েছিলেন গিবস। তার ১১১ বলে ১৭৫ রানের ইনিংসের উপর ভর করে দুর্দান্ত এক জয় পেয়েছিলো দক্ষিণ আফ্রিকা।

হার্শেল গিবস টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন ৯০ টি। তিনি ১৪ টি সেঞ্চুরি ও ২৬ হাফ সেঞ্চুরিসহ মোট রান করেছেন ৬১৬৭। সর্বোচ্চ ইনিংস ২২৮। ডাবল সেঞ্চুরির এই ইনিংস খেলছেন ১৯৯৯ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে।

হার্শেল গিবস বিশেষভাবে ক্রিকেট ভক্তদের কাছে পরিচিত হয়ে আছেন ২০০৭ সালের এক অনবদ্য কীর্তির রেকর্ড করার জন্য। ২০০৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৬ বলে ৬ ছক্কা হাঁকান ।

গিবস দ্বিতীয় আফ্রিকান হিসেবে বিশ্বকাপে ১০০০ এর বেশি রান করেছেন। অপর খেলোয়াড় হলেন জ্যাক ক্যালিস।

অন্য অনেক খেলোয়াড়ের মত তার ক্যারিয়ারেও খারাপ সময় গেছে। ২০০৯ সালে ফর্মহীনতার কারনে দল থেকে বাদ পড়েন। ২০০১ সালের সতীর্থদের সাথে গাজা সেবনের অভিযোগে জরিমানা করা হয়। তার দলের সতীর্থ হেন্সি ক্রোনিয়ের সাথে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগ আনা হয় যদিও তিনি কিংস কমিশনকে ব্যাখ্যা দেন তিনি ফিক্সি এর চুক্তি শেষ পর্যন্ত পালন করেননি। তাকে ৬ মাসের  জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো।

১৯৯৯ সালের বিশকাপে অস্ট্রেলিয়ার সাথে গুরুত্বপুর্ন এক ম্যাচে স্টিভ ওয়াহর ক্যাচ ফেলে দেন। তিনি ক্যাচ ধরে উদাযাপনের জন্য বলের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রন না নিয়ে উপরে বলটি ছুড়ে দেন। যে ম্যাচে স্টিভ ওয়াহ অপরাজিত ১২০ রান করেন, স্টিভ ওয়াহ গিবসকে স্লেজিং করে বলেছিলেন ‘তুমি বিশ্বকাপটি ফেলে দিয়েছো’।

ক্রিকেট মাঠের ফিল্ডার হিসেবে তাকে বিশ্বের অন্যতম সেরা ফিল্ডার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। গিবস তার ক্যারিয়ারে ওয়ানডে ম্যাচে ১০৮ টি এবং টেস্ট ম্যাচে ৯৬ টি ক্যাচ নিয়েছেন। টিটুয়েন্টি ম্যাচে ৮ টি ক্যাচ নিয়েছেন।

হার্শেল গিবস বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ বা বিপিএলে ২০১২ সালে খুলনা রয়েল বেঙ্গলস এর সদস্য ছিলেন।

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ