সাদা ক্রিকেট বল ছবি-সংগৃহিত |
একটি ক্রিকেট ম্যাচের ফলাফল নির্ধারিত ঐ ম্যাচে
ব্যবহৃত বলের গতিপথের মাধ্যমে। বোলার কর্তৃক করা বল স্ট্যাম্পে আঘাত করবে নাকি
ব্যাটারের ব্যাটের আঘাতে বাউন্ডারির বাইরে যাবে, নাকি বাতাসে ভেসে কোন ফিল্ডারের
হাতে জমা পড়বে তার উপর ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত হয়।
ধারণা করা হয় ১৭৬০ থেকে ১৮৪০ সালের
মধ্যে ক্রিকেট বল তৈরি করা হয়।
ইংল্যান্ডের ডিউক পরিবার প্রথম ক্রিকেট বল তৈরি করে। ১৭৮০ মৌসুমে
ক্রিকেট বল প্রথম ব্যবহার করা হয়। আমরা যারা ক্রিকেট খেলা দেখি বা খেলার
খোজ খবর রাখি তারা জানি যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিন রঙের বল ব্যবহৃত হয়। সাদা ,
লাল এবং গোলাপী। সাদা বল ব্যবহার করা হয় ওয়ানডে বা ৫০ অভারের ক্রিকেটে এবং
টিটুয়েন্টি বা ২০ অভারের ক্রিকেট খেলায়। আর লাল বল ব্যবহৃত হয় টেস্ট ক্রিকেট
ম্যাচে। গোলাপী রঙের বলও টেস্ট খেলায় ব্যবহার করা হয় তবে সেটি ডে নাইট টেস্ট
ম্যাচে। টেস্ট খেলা লাল বল দিয়েই খেলা হত। ২০১৫ সালে ডে নাইট টেস্ট চালু হয়। প্রথম
ডে-নাইট টেস্টে মুখোমুখি হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। যেখানে ফ্লাডলাইটের
নিচে সাদা পোশাকে লাল বল খেলা সম্ভব নয় বলে গোলাপী বল প্রবর্তন করা হয়।
লাল ক্রিকেট বল ছবি- সংগৃহিত |
ক্রিকেট বলের
গঠন
অনেকেই মনে করেন ক্রিকেট বলে কাঠের ব্যবহার করা
হয়। মূলত ভিতরে অনেকগুলো ছোট কর্কের টুকরা
চামড়ার আবরণ দিয়ে মুড়িয়ে দেওয়া হয়। ব্রিটিশ স্টান্ডার্ড বিএস ৫৯৯৩ ক্রিকেট বলের গুনগত মান, বিবরণ, মাত্রা
নির্ধারন করে থাকে। একটি গুনগত মানের বলের আবরন চতুর্ভাগ কমলালেবুর
খোসার মত আকৃতির চার টোকরা চামড়া দিয়ে তৈরি করা হয়। বলের মাঝ বরাবর বিষুব
রেখা দিয়ে স্ট্রিং দিয়ে সেলাই করা হয়। তার দুই পাশে প্রতি অর্ধে তিনটি করে সেলাই
দিয়ে ছয়টি সীম তৈরি করা হয় । বোলারদের
গ্রীপ শক্ত করার জন্য মাঝখানের সীম তারা ব্যবহার করে থাকে। হয়। ১৭৪৪ সালের ক্রিকেট আইন অনুসারে একটি ক্রিকেট
বলের ওজন ৫ থেকে ৬ আউন্সের মধ্যে নির্ধারিত । অর্থাৎ পুরুষদের ক্রিকেটে যে
বল ব্যবহার করা হয় তার ওজন প্রায় ১৫৬ গ্রাম থেকে ১৬৩ গ্রামের মধ্যে। আর মেয়েদের
ক্রিকেটের বলের ওজন প্রায় ১৪০ থেকে ১৫১ গ্রাম ।
বলের ব্যবহার
ক্রিকেটের শুরু থেকে সব ধরনের খেলায় লাল বলি
ব্যবহার করা হত। ১৯৭৭ সালে প্রথম সাদা বলের ব্যবহার শুরু হয়। সাদা বল যত পুরাতন হয়
পেস বোলাররা রিভার্স সুয়িং করাতে তত বেশি সক্ষম হন। সাদা বল দ্রুত রং হারিয়ে ফেলে
বলে ম্যাচের মাঝখানে সাদা বল পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়।আন্তর্জাতিক ম্যাচে যে বলগুলো
ব্যবহৃত হয় তার তিনটি প্রধান নির্মাতা হলো কুকাবুরা, ডিউকস,এবং এসজি।এর মধ্যে
কুকাবুরা বল ব্যবহৃত বেশি ব্যবহৃত হয়। কুকাবুরা বেশি ব্যবহার করে অস্ট্রেলিয়া।
ডিউক বল বেশি ব্যবহৃত হয় ইংল্যান্ড ও
ওয়েস্ট ইন্ডিজে। ভারত বেশি ব্যবহার করে এসজি । ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে সাদা ডিউকস বল
ব্যবহার করা হয়েছিল, কিন্তু কুকাবুরা বলের চেয়ে বেশি অনিয়মিত ব্যবহার করেছিল বলে
তারপর থেকে সাদা ডিউকস বল ব্যবহার করা হয়নি। সাদা কুকাবুরা বলগুলি ওয়ান্ডে ও
টিটুয়েন্টি ম্যাচের জন্য ব্যবহার করা ।
গোলাপী ক্রিকেট বল ছবি-সংগৃহিত |
একজন খেলোয়াড়
জন্য নিম্নোক্ত কাজগুলো করা বে-আইনী
-
বলের উপর ঘাম ছাড়া কোন শক্ত পদার্থ দিয়ে ঘোষা
-
বলের সুতা তুলে ফেলা
-
বলে কামড় বা অন্যকোন মাধ্যমে বলের আকৃতি পরিবর্তনের চেষ্টা করা
৫০ ওভার বা
একদিনের ম্যাচ খেলায় বর্তমানে দুই প্রান্ত থেকে ২ টি নতুন বল ব্যবহার করা হয়। পুর্বে
একটি বল দিয়েই ৫০ ওভার খেলার পরিকল্পনা করা হত ফলে ৩৫ বা ৪০ ওভার পরে বলের রঙ বা
আকার পরিবর্তন হলে বল পরিবর্তন করা হত। টেস্ট খেলায় প্রত্যেক দল শুরুতে এবং ইনিংসে ৮০ ওভার পার হলে অধিনায়ক নতুন বল নিতে
পারেন। তাছাড়া কোন কারনে বল হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হয়ে গেলে বল পরিবর্তনের সুযোগ
পাওয়া যায়।
0 মন্তব্যসমূহ