মোহাম্মদ জাকারিয়া পিন্টু ১৯৪৩ সালের ১লা জানুয়ারি ব্রটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির নওগাঁয়
জন্মগ্রহন করেন । তিনি বাংলাদেশের একজন পেশাদার
ফুটবলার ছিলেন। ১৮ নভেম্বর ২০২৪ সাল সকাল ১১ টায় না ফেরার দেশে চলে যান ৮১ বছর
বয়সী ফুটবলের এই কিংবদন্তী । তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বাংলাদেশ
যখন স্বাধীনতা যুদ্ধে অবতীর্ন আজ থেকে ৫৩ বছর আগে ক্রীড়া ইতিহাসে ঘটেছিলো ঐতিহাসিক
ঘটনা । পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর স্টেডিয়ামে খেলতে নামে একদল সাহসী যুবক।
নদীয়া জেলার ক্রীড়া সমিতির বিপক্ষে খেলতে নামে স্বাধীন বাংলাদেশ ফুটবল দল। বাংলাদেশের
বিপক্ষে জনমত গড়ে তোলা ও তহবিল সংগ্রহ করার জন্য তারা একের পর এক ফূটবল ম্যাচ খেলে
যেতে থাকে । এই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক
ছিলেন আজ না ফেরার দেশে চলে যাওয়া জাকারিয়া পিন্টু। সেই সেময় এই দলটি প্রায় ১৬ টি
ম্যাচ খেলেছিলো । যে অর্থ সংগ্রহ হয়েছিলো তা জমা দেওয়া হয়েছিলো মুক্তিযুদ্ধ
তহবিলে।
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল ছবি- সংগৃহিত
পৃথিবীর
ইতিহাসে যুদ্ধকালিওন প্রথম ফুটবল দল এটি। ১৯৭১ সালে গঠণ করা হয় দলটি। অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি
সৈয়দ নজরুল ইসলাম তার স্বাক্ষরিত চিঠিতে এই দল গঠনের কথা উল্লেখ করে মুজিবনগর গিয়ে
যোগদান করতে বলা হয়। সেই ঘোষনায় প্রায় ৪০ জন খেলোয়াড় যোগদান করেন। তার মধ্য থেকে
৩০ জন কে বাছাই করা হয়।
ম্যাচ শুরুর আগে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা
হাতে স্টেডিয়াম প্রদক্ষিণ করে। জাকারিয়া পিন্টু ও প্রতাপ শঙ্কর হাজরার নেতৃত্বে
বাংলাদেশের পতাকা হাতে মাঠ প্রদক্ষিণের সেই ছবি বাংলাদেশের ক্রীড়া ইতিহাসের অন্যতম
সেরা ছবি হিসেবে স্বীকৃত। ম্যাচ শুরুর আগে নদীয়া জেলার প্রশাসক ডি কে ঘোষ
খেলোয়াড়দের সঙ্গে পরিচিতি পর্ব সারেন। একসঙ্গে গ্রুপ ছবিও তোলেন। এই দিন
মেহেরপুর সীমান্ত এলাকা দিয়ে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি ম্যাচ উপভোগ করতে স্টেডিয়ামে আসে।
সেখানে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতও বাজানো হয় ।
জাতীয় পতাকা নিয়ে মাঠ প্রদক্ষিন ছবি- সংগৃহিত |
ম্যাচটি সেদিন ২-২
গোলে ড্র হয়েছিলো। ঐ ম্যাচের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি ছিলো স্টেডিয়াম ভর্তি মানুষের
ভালোবাসা। সেই ম্যাচে স্বীকৃতিছাড়া বাংলাদেশের পতাকা ঊড়ানোর দ্বায়ে নদিয়া জেলার
ডিসিকে চাকরি হারাতে হয়েছিলো।
0 মন্তব্যসমূহ