'গোল্লাছুট' এখন শুধুই হারিয়ে যাওয়া শৈশবের স্মৃতি

 



গোল্লাছুট খেলার দৃশ্য  ছবি-সংগৃহিত


‘গোল্লাছুট’ শব্দটার সাথে মিশে আছে গ্রামীন বাংলার শ্বাশত রুপ। এটি এখন বাংলার মানুষের জন্য এক সোনালী অতীত। গোল্লাছুট আবহমান গ্রাম বাংলার জনপ্রিয় খেলা যা এখন অনেকের কাছে দুরন্ত শৈশব, স্মৃতিঘেরা বাল্যকাল। বিশ্বায়নের এই যুগে এই  গোল্লাছুট খেলা এখন বিলুপ্তপ্রায়। নব্বইএর দশকে স্কুল থেকে ফিরে গ্রামের ছেলেমেয়েরা ছুটে যেত বাড়ির পাশে ফেলে রাখা পতিত জমি বা খেলার মাঠে। তখন ঘরে ঘরে টেলিভিশন ছিল না। ছিল না হাতে হাতে স্মার্ট ফোন। রোদ, বৃষ্টি উপেক্ষা করে দুরন্ত ছেলেমেয়েরা মেতে উঠত গোল্লাছুট খেলাতে।

খেলার নিয়মঃ

তিত চাষের জমি, খোলা মাঠ বা বাগানে সাধারনত গোল্লাছুট খেলা  দুই দলের মধ্যে  অনুষ্ঠিত হয়। প্রত্যেক দলে খেলোয়াড়ের সংখ্যা ৫ থেকে ৭ জন বা তার বেশিও হয়। একটি গর্ত করে সেখানে লাঠি পুঁতে রাখা হয়। লাঠির চারপাশ দিয়ে বৃত্ত আকা হয় যার নাম গোল্লা। দলের প্রধানকে বলা হয় গোদা। তার কাজ হলো গোল্লা রক্ষা করা। তিনি লাঠি ধরে রাখবেন এক হাতে অন্য হাতদিয়ে তার দলের খেলোয়াড়ের হাত ধরে রাখেন।এভাবে পরস্পরে হাত ধরাধরি করে গোল্লাকে কেন্দ্র করে ঘুরতে থাকে। 



গোল্লাছুট খেলা ছবি সংগৃহিত

গোল্লা থেকে ত্রিশ- পয়ত্রিশ হাত দূরে সিমানা নির্ধারন করা হয়। যেটা চিহ্নিত করা হয় কোন গাছ বা ইট অথবা জমির আইল দিয়ে । অন্য দলেরে খেলোয়াড়েরা চারিদিকে ছড়িয়ে থাকে যাতে গোল্লা রক্ষা কারি দলের কেঊ এই সীমানা স্পর্শ না করতে পারে। গোল্লা রক্ষা কারী দলের যিনি অপর পক্ষকে ফাকি দিয়ে সিমানা স্পর্শ করতে পারবে তিনি গোল্লা থেকে এক লাফ সামনেরর দিকে যাবেন ।আর যদি অন্য পক্ষের প্লেয়ারে তাকে স্পর্শ করে তাহলে তিনি বাদ । এভাবে সবাই বাদ পড়লে প্রতিপক্ষ সুযোগ পাবে গোল্লা রক্ষা করা জন্য। আর যদি এক লাফ করে ত্রিশ হাত দুরের সিমানা ছুয়ে ফেলে তাহলে সেই দল জয়ী। গোল্লা থেকে ছুটতে হয় বলে এই খেলার নাম গোল্লাছুট।

গ্রাম বাংলার এই ঐতিহ্যবাহী খেলাটি হারাতে বসেছে তার আবেদন। পরবর্তী প্রজন্মের কাছে এই খেলাটির নামটিই  হয়তো অচেনা হয়ে যাবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ